লৌহজং প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা দুটি রোড ম্যাপ চাচ্ছি। একটা সংস্কারের জন্য। সেই রোড ম্যাপের নির্দিষ্ট হতে হবে কী কী বিষয়ে সংস্কার হবে এবং কতদিনের ভিতরে সংস্কার হবে।
সংস্কারের রোড ম্যাপ যদি সফলতা হয়, তাহলে পরবর্তী দেরি না করে নির্বাচনী রোড দিতে হবে। কিন্তু প্রথমটা যদি সফল না হয় তাহল দ্বিতীয়টি ব্যার্থ হবে। আমরা কোন ব্যর্থ নির্বাচন চাচ্ছি না। আমরা একটা সফল নির্বাচন চাচ্ছি।
শনিবার রাত ১০ টায় কক্সবাজারে নিহত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জনের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করের বেতকায় গিয়ে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যে ডাকাতদল এই ঘটনার সাথে জড়িত তারা এক মাস আগে জামিনে বের হয়েছে। এরপর তারা বিশাল একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। এরকম আরও অনেকেই জেল থেকে জামিন পেয়েছেন। সরকারকে এগুলো দেখতে হবে। দেশ আমাদের সবার। কোন দলের ও ব্যক্তির নয়। এই দেশ ১৮ কোটি মানুষের। তাদের স্বার্থে যা করার দরকার সবই করতে হবে।
শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পালিয়ে যাওয়া কোন ভালো জিনিস না। উনি চলে যাওয়ার পরে মাঝে মধ্যে টেলিফোনের কথা শুনতে পাই। আমার মনে হয় তিনি এখান থেকে সরে গিয়েছেন, নিশ্চিই তিনি উপলবদ্ধি করেছেন দেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে না। যেহেতু দেশের মানুষ তাকে ভালোবাসে না জোর করে আবার নিজেকে স্থান করা বুদ্ধিমত্তার কাজ হবে না বলে আমি মনে করি। তিনি যদি অপরাধী হন, কোন অপরাধ করে থাকেন তাহলে তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি আইন আমরা হাতে তুলে নিব না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এতে শাস্তি দিতে হবে। কে যড়যন্ত্র করছে না করছে এটা বড় কথা নয়। জাতি কিন্তু এখন ঐক্যবদ্ধ ও মজমুত। গোটা যুব সমাজের বিরুদ্ধে তারা দাঁড়িয়ে গণহত্যা করেছে। নৈতিক দিক থেকে তারা পরাজিত হয়েছেন। এখন তাদেরই মূল্যায়ন করতে হবে যে তারা রাজনীতি করার কোন অধিকার রাখে কী না।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, দেশের জন্য জীবন দেওয়া সবার সৌভাগ্য হয় না। তিনি সেনাবাহিনীতে যেনে শুনেই গিয়েছিলেন। এটা জীবন মৃত্যুর খেলা এবং সেটা দেশ রক্ষার খেলা। এটা জেনেই তিনি সেখানে গিয়েছিল, আলহামদুলিল্লাহ। তার মা-বাবাকে এরকম একটা সন্তান দিয়ে ধন্য করেছেন। আমরা এখানে আসিনি ওনাদেরকে গর্বিত করতে, আমরা এসেছি নিজেরা গর্বিত হতে।
তিনি আরও বলেন, এরকম বাবার কপালে চুমু দেওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমরা মনে করি এটা আমাদের জাতীয় নাগরিক দায়িত্ব, তাদের প্রতি সম্মান দেখানো। আমি সম্মান দেখানোর জায়গা থেকে এখানে এসেছি। আপনাদের সবার প্রতি, এলাকার মানুষের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে আপনারা তাদের (বাবা-মা) বুকটা ভরে রাখবেন। আপনারা তাদের খোঁজ-খবর নেবেন আমরাও যতটুকু পারি পাশে থাকবো।
নির্জনের পরিবারের সাথে তিনি দীর্ঘসময় কথা বলে তার বাবা ছারওয়ার জাহান দেলোয়ার, মা শাহনাজ খান ও বড় বোন তাসনুভা সারোয়ার সূচীকে সাথে নিয়ে দোয়া করেন।
এ সময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামাতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, জেলা সেক্রেটারি হুমায়ুন কবীর, জেলা সহকারী সেক্রেটারি হোসনী মোবারক বাবুলসহ দলের অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার দিবাগত রাতে দায়িত্বপালনকালে চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন (২৩) নিহত হন।