লৌহজং প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, এবারের পূজাটা যেন নতুন বাংলাদেশের পূজা হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে কিছু থাকতে পারে না। এখানে আমরা সবাই একটা পরিবারের মানুষ। এখানে কে হিন্দু কে বৌদ্ধ এটা নিয়ে কোন বৈষম্য হবে না।
তিনি বলেন, আমরা ঈদে আনন্দ করবো পূজায় ভয়ে থাকবো এটা হতে পারে না। পূজায় কেন ভয়ে থাকতে হবে। পুলিশ দিয়ে আনসার দিয়ে পাহাড়া দিয়ে পূজাটাকে আনন্দময় করবো এটা তো হয় না। এটা আসলেই আনন্দের জিনিস হিন্দু মুসলিম সবাই মিলে আমরা আনন্দ করতে পারি। সেজন্য সামাজিকভাবে পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যেন সবাই আনন্দটা করতে পরি। সবাই যদি চেষ্টা করি তাহলে অবশ্যই ভালো একটা পূজা করতে পারবো।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যেদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব বলেন।
তিনি আরও বলেন, মাওলানা ভাসানী না থাকলে এ দেশ স্বাধীন হতো না। ভাসানী শুধু টাঙ্গাইলের গর্ব নয়, তিনি বাংলাদেশের গর্ব। যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারটা গঠিত হয়েছে। যে জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন দীর্ঘদিনের মানুষের মধ্যে বৈষম্যবোধ ছিল, বঞ্চনার ব্যাপার ছিল, বঞ্চিত হওয়ার ব্যাপার ছিল। সব উজ্জীবিত হয়েই কিন্তু আন্দোলনটা তুঙ্গে উঠেছিল। অনেকে মনে করেন এটা ছাত্রদের আন্দোলন কিন্তু না এটা ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছিল। সর্বস্তের মানুষ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। সাধারণ দিনমজুরের বাচ্চা ছেলে ১৪-১৫ বছরের ছেলে সে আবু সাঈদের ভিডিও দেখে নাকি রাস্তায় নেমে গেছে মা গেলাম বলে রাস্তায় মেনে গেছে।
তিনি আন্দোলনে শহীদদের সংখ্যা সম্পর্কে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যে তালিকা করেছি ৮’শ-৯’শ বলা হচ্ছে, কিন্তু অন্যান্য হিসাবে দেখা যায় যে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। তার অধিকাংশই তরুণ ছেলেরা আমাদের সন্তানেরা প্রাণ দিয়েছে। কাজেই এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কিছুটা দায়িত্ব যদি আমরা নিয়ে থাকি। আমরা যারা উপদেষ্টা আছি, আমরা দায়িত্ব যেটা নিয়েছি। এজন্য আমাদের কর্তব্য অনেক বেশি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত আমাদের পাশে থাকার কারণে নাম ধরতে হয়। বাংলাদেশ হল ইলিশ মাছের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আমাদের কোস্টগার্ড নৌবাহিনী খুব সর্তক অবস্থানে রয়েছে। এবার তারা আরও সর্তক অবস্থানে রয়েছে। ইলিশ মাছ চোরাচালানও হয়। স্থলপথেও কিন্তু ইলিশ মাছ চোরাচালান হয়। সবক্ষেত্রেই বিজিবিসহ সবাই সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু, র্যাব-১৪ এর স্কোয়াড কমান্ডার সহাকারি পুলিশ সুপার আব্দুল বাছেদ, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চিত্তরঞ্জন সরকার, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ গুণ ঝন্টু, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি দীলিপ দাস, ভূঞাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি স্মরণ দত্ত প্রমুখ।