লৌহজং প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের বাসাইলে হাবলা টেঙ্গুরিয়াপাড়া আব্দুল্লাহেল বাকী (এইচ.টি.এ.বি) উচ্চ বিদ্যালয়ের সাফল্য সম্প্রতি সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতবছর এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়ে পাশের হার ছিলো শতকরা ৯৫ শতাংশ, যার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিলো ৭ জন। গত ১২-১৩ বছরে বিদ্যালয়ে পাশের হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে উপজেলায় এই বিদ্যালয়ের নাম গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে নিয়েছে। সম্প্রতি সময়ে সারাদেশে যখন অনেক প্রধান শিক্ষকদেকদের পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। সেই মুহুর্তেও এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের মাঝে আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান।
জানাযায়, ১৯৯২ সালে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য দুই একর জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন শিক্ষানুরাগী আব্দুল্লাহেল বাকী। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মধ্যে দিয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এসএম আব্দুস সামাদ। সহজ সরল মনোভাবের প্রধান শিক্ষকের সাথে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সর্ম্পক পিতা-সন্তানের মত রয়েছে। প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকেই তিনি বিদ্যালয়র নানা উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য উন্নয়গুলো হচ্ছে বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ , মাঠ ভরাট, ল্যাব সংস্থাপন, পাঠাগার তৈরি, বিজ্ঞানাগার তৈরি, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর তৈরিসহ নানা উন্নয়ন করেছেন সকলের সহযোগীতায়।
এছাড়াও বিদ্যালয়ে এসএমবি ক্লাস নিয়োমিত নিচ্ছেন। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৫০০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। গত বছর এএসসি পরীক্ষায় ৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এছাড়াও উপজেলা ভিত্তিক খেলাধুলা ও বিতর্ক প্রতিযোগীতায় ওই বিদ্যালয়টি সেরা স্থান অর্জন করেছেন। স্বচ্ছ পাঠদানের জন্য প্রতিটি শ্রেণি কক্ষে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থাও রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুই একর জমিতে বিদ্যালয়ের চারপাশ সুন্দর সীমানা প্রাচীরে ঘেরা। চারিদিকে নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে, এ যেন সবুজের সমারোহ। প্রচন্ড তাপদাহেও ঠান্ডা থাকে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম গুলো। বিদ্যালয়ে বড় একটি খেলার মাঠ রয়েছে। প্রতিবছর উপজেলা ভিত্তিক ফুটবলে ব্যাপক সুনাম রয়েছে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রদের। ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়, বিদ্যালয়ের স্যারদের সাথে তাদের অনেক ভালো সর্ম্পক রয়েছে এবং পড়ালেখার মানও ভালো।
স্থানীয় কয়েকজন জানায়, প্রত্যান্ত অঞ্চলে গড়ে উঠা বিদ্যালয়টি এক সময় অবহেলিত থাকলেও আব্দুস সামাদ প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর বিদ্যালয়ের সাফল্য দিনদিন বাড়ছে। এক সময় বিদ্যালয়টি টিনের ঘর ছিলো, প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা পর্ষদ ও বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষকদের সহযোগীতায় বিদ্যালয়টি আজ পরিপুর্নতায় রুপ নিয়েছে। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানও অনেক ভালো।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজী) মো. ফজলুল করীম জানান, বিদ্যালয়টি একসময় জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিলো। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ছিলো না,মাঠ নিচু থাকায় পানি উঠে থাকতো। প্রধান শিক্ষকের প্রচেষ্টায় ও সকলের সহযোগীতায় বিদ্যালয়ের পড়ালেখা ও উন্নয়নে আজ সাফল্যর দিকে দাবিত হচ্ছে। আশাকরি আগামী দিনে বিদ্যালয় আরো এগিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে হাবলা টেঙ্গুরিয়া পাড়া আব্দুল্লাহেল বাকী (এইচ.টি.এ.বি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আব্দুছ ছামাদ বলেন, প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী ছিলেন পরে তিনি প্রধান শিক্ষক হয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার মান ভালো করার জন্যই তিনি এখনও নিয়মিত পাঠদান করান। তিনি আরও বলেন, ২০১২ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর পাশের হার ছিল শতকরা ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ। বর্তমানে পাশের হার ৯৫ শতাংশ। এই সাফল্যে তিনি খুশি। আগামী দিনে আরও পাশের হার বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।