লৌহজং প্রতিবেদক: সম্প্রতি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২২ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ক্ষোভে ছাত্ররা কলেজে ভাঙচুর চালায়, পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গত সোমবার এ ঘটনায় শিক্ষক লোকমান হোসেনকে দায়ী করে কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মানববন্ধন করে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রভাষক লোকমান হোসেন।
৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে উপজেলার নিকরাইল বাজারে নিজ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় ২২জন শিক্ষার্থীর নিকট ফরম ফিলাপ বাবদ ৮ হাজার টাকা দাবি করে কলেজের পরিক্ষা কমিটি। ওই শিক্ষার্থীদের টাকা কম থাকায় তার নিকট আসে। পরে তিনি ওই ছাত্রদের নিয়ে গিয়ে রোল নম্বর ও প্রদত্ত টাকাসহ নাম ঠিকানা লিখে পরিক্ষা কমিটির নিকট জমা দেন।
টাকা কম হওয়ায় কমিটি বলে দেয় ফরম ফিলাপের শেষের দিন তাদের রশিদ দেওয়া হবে। এছাড়াও কলেজের অধ্যক্ষ আশ্বাস দেন পরীক্ষার আগের দিন তোমরা প্রবেশপত্র পাবে। গত ২৯ জুন অধ্যক্ষ কলেজে এস ঘোষনা দেন যারা লোকমান হোসেনের মাধ্যমে ফরম ফিলাপের টাকা জমা দিয়েছো তাদের ফরম ফিলাপ হয়নি।
এ কথা শুনে ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে উঠে। পরে ওই ছাত্রদের মধ্যে দুইজন ও তাদের দু’জন অভিভাবক সাথে নিয়ে ঢাকায় রওনা দেই। ঢাকায় পৌঁছাতে রাত ১০টা বেজে যায় বিধায় বোর্ড বন্ধ পাই। ঢাকায় একরাত থেকে বোর্ডে গেলে উপ-পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক নহিন ইসলাম বলেন, ওই ২২ জন শিক্ষার্থীর ফরম পুরণ হয়ে এডমিট (প্রবেশ পত্র) প্রিন্ট হয়ে তার দপ্তরে রয়েছে।
গতকাল ৯টার আগে আসলেও নিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু আপনাদের অধ্যক্ষ মো.আক্তারুজ্জামান রাত ৯ টার দিকে চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করে এডমিট বাতিলের জন্য। আমি অনুরোধের পরেও ওই শিক্ষার্থীদের এডমিটকার্ড আনতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, কলেজে একজন শিক্ষক জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী করে। অন্য শিক্ষক কলেজের টাকা তছরুপ করে এর প্রতিবাদ করায় তাদের সাথে আমার অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। সেই কোন্দলের বলি যে শিক্ষার্থীরা হবে এটা আমি বুজতে পারিনি। ওই ছাত্রদের ফরম-ফিলাপ যদি না হয়ে থাকে তাহলে অধ্যক্ষ এডমিট কার্ড বাতিলের আবেদন করলো কেন।
আমি যদি পরিক্ষা কমিটির কাছে ফরম পুরণের টাকা জমা না দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে বরখাস্ত করে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে পারতো। তাহলে ওই ২২ শিক্ষার্থী পরিক্ষার সুযোগ পেতো। এখন কেন আমাকে বরখাস্ত করা হলো। সম্পুর্ণ পরিকল্পিতভাবে আমাকে কলেজ থেকে সড়ানোর জন্য এ নেক্কারজনক কাজ করেছে তারা। আমি এ সাময়িক বরখাস্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রীসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।