লৌহজং প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টি টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়া বাড়ী ইউনিয়নের এসডিএসের সহযোগিতা প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের ৮ একর জায়গার ক্রয় সূত্রে বৈধ মালিক তিনি। এই জমি ক্রয়ের সমস্ত বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও একটি মহল তাকে রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিনিয়ত অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে ইতিমধ্যে গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি)টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। প্রয়োজনে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করবেন তিনি।
প্রতিবেদকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের গদুরগাতি ও পোড়াবাড়ী মৌজায় ১২৫ একর জমির ওপর এসডিএসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউট(আইআর আই)এর গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। পরে তাদের মুল প্রতিষ্ঠান এসডিএস অর্থনৈতিকভাবে দেওলিয়া হয়ে গেলে এই জায়গা দীর্ঘ দিন পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের মহাপরিচালক হচ্ছেন মোঃ নুরুল ইসলাম। তিনি জেলার সখীপুর উপজেলার আড়াই পাড়া গ্রামের আনসার আলী ছেলে। বর্তমানে পোড়াবাড়ী থাকেন।
তিনি বলেন, এসডিএস অর্থনৈতিকভাবে দেওলিয়া হলে, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ইসমাইল হোসেন সিরাজী তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের মহাপরিচালক নুরুল ইসলাম মাধ্যমে বিক্রির প্রস্তাব করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ১২৫ একর জমির মধ্যে ৮ একর জায়গা আমার পছন্দ হওয়াতে আমি উক্ত ভুমি ক্রয় করিতে রাজি হই। পরে গত ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যে সাফ কওলা দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে উক্ত ভুমি মালিক হই। যার দলিল নাম্বার – ৪৪৬। এই ১২৫ জমির মালিক ছিল ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের এবং মহাপরিচালক হচ্ছেন মোঃ নুরুল ইসলাম। এ ছাড়াও সোশাল ডেভেলপমেন্ট সংসদ এসডিএসের গত ৪ মার্চ ২০১৩ সালের কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভায় নানা ধরনের অর্থনৈতিক অনিমের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন সিরাজীকে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলামকে সর্ব-সম্মতিক্রমে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের বৈধতা দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে হঠাৎ করে গত বছর ইসমাইল হোসেন সিরাজী নিজেকে ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের মালিক দাবি করে ১১ মার্চ টাঙ্গাইল যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে মোঃ নুরুল ইসলামের সাথে সম্পাদিত উক্ত ভুমির সাব কাওলা দলিল পন্ড চাহিদা মামলা দায়ের করে। একই সাথে আমার ক্রয়কৃত ভুমিতে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে ১৪৪ ধারা চাহিদা আরও একটি মামলা দায়ের করে। পরে মাননীয় আদালত কোন ধরনের ১৪৪ ধারার গ্রাউন্ড না পেয়ে মামলাটি খারিজ করে দেন। বর্তমানে দলিল পন্ডের মামলাটি চলমান।
এছাড়া গাজীপুর জেলার মজুখান এলাকার মোঃ নাজমুল হুদা নামে জনৈক ব্যক্তিকে গত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে প্রতিষ্ঠানের পুরো জমির পাওয়ার অব এটনি প্রদান করে। যা সম্পূর্ণ ভাবে অবৈধ। এই পাওয়া অব এটনি পাওয়া ব্যক্তি আমার নামে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। আমি আমার রেজিস্ট্রিকৃত জমি ভোগ দখল করে আসছি। আমার প্রয়োজনে এখান থেকে মাটি কাটছি, ইতিপূর্বে এই বিষয়ে ১৪৪ ধারায় মামলা করলেন মহামান্য আদালত সেটা খারিজ করে দেন।আমি আশা করি, মাননীয় আদালত ন্যায্য বিচার করবেন।
মোজাম্মেল বলেন, আমি বিরক্ত হয়ে ইসমাইল হোসেন সিরাজীকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালে ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় মামলা দায়ের করি। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি ইসলামিক রিসার্চ ইনিস্টিটিউটের/এসডিএসের বেশ কিছু জমি সাব-কাবলা দলিলের মাধ্যমে বিক্রির করেছে পরিচালক নুরুল ইসলাম। যেখানে ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন ইসমাইল হোসেন সিরাজী। জমির মালিক যদি সিরাজী হয় তাহলে তিনি সাক্ষী হবেন কেন? একটি প্রতিষ্ঠানের সম্পদের বিক্রির পাওয়ার অব এটনি কিভাবে ইসমাইল হোসেন সিরাজী দেন, তিনি তো ঐ সম্পত্তির আইনগত ভাবে একক মালিক নন?
উক্ত জমি ক্রয়ের বৈধ কাগজপত্র ও খাজনা পরিশোধ ও খারিজ আমার নামে হওয়া সত্বেও একটি শ্রেণী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের লিপ্ত রয়েছে, যা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হয়রানি করার জন্য।
আমি টাঙ্গাইল বাসীর কাছে এই অপপ্রচারে কান না দেওয়ার অনুরোধ করছি। এ বিষয়ে দ্রুতই টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সবার কাছে বিষয়টি তুলে ধরবো