লৌহজং প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে পারিবারিক দ্বন্দ্বে বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত বাবাকে পিটিয়ে আহত করলেন ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার ২১ এপ্রিল সকালে সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বেলটিয়াবাড়ি গ্রামে।
পরে আহত অবস্থায় ওই বাবাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযুক্ত ছেলের নাম মো. সোহাগ খান (৩৫)। সে ওই গ্রামের মো. সেলিম খানের ছেলে।
এ বিষয়ে আহতের স্ত্রী শাহানাজ খানম বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত সেলিম খান জানান, তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়েকে বিবাহ দিয়েছেন। দীর্ঘদিন বিজিবিতে চাকরির পর অবসরে আসেন তিনি। অবসরে এসে পেনশনের টাকা ও আবাদি জমি বিক্রি করে সন্তানদের সুখের জন্য তিনতলা ভবন করেছেন।
ছেলে লেখাপড়া না করায় জমি বিক্রি করে তাকে বিদেশে পাঠান। বিদেশে গিয়ে ছেলে বিভিন্নভাবে টাকা নষ্ট করে। একপর্যায়ে ছেলে দেশে চলে আসে। দেশে আসার পর নেশায় জড়িয়ে পরে। টাকার জন্য মাঝে মধ্যে অত্যাচার করতো।
গত নয় মাস যাবত বাসা ভাড়া তুলে ইচ্ছে মতো খরচ করে ছেলে। খরচ সামলাতে না পেরে এনজিও থেকেও ঋণ নেয়। হঠাৎ করে রবিবার সকালে কিস্তির টাকা চায় ছেলে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে কিল-ঘুষি, চর-থাপ্পর ও লাথি মারে ছেলে।
একপর্যায়ে খাবার প্লেট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আঘাতের সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেলে আশপাশের লোকজন ও ছেলের বউ এসে উদ্ধার করে। পরে মেয়ের জামাতা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বড় মেয়ের জামাতা গালা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মো. সুজন খান বলেন, এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা ইতিপূর্বেও ঘটেছে। মানসস্মানের ভয়ে কাউকে কিছু বুঝতে দেয়নি। এবার তার শ্যালক সোহাগ যে কান্ড করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত ছেলে সোহাগ মুঠোফোনে জানান, দীর্ঘ নয় বছর বিদেশ করে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা দেশে পাঠিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে দুই বোন ও বোনের সন্তানদের লেখাপড়ার পিছনে খরচ করেন তার বাবা।
এছাড়াও বিদেশ থাকাকালীন সময়ে সম্পত্তি বিক্রি করে বোনদের টাকা দেন। দেশে এসে বিয়ে করেন তিনি। তেমন কোন উর্পাজন না থাকায় বাসা ভাড়ার টাকা দিয়ে সংসার চলে। বোনদের পিছনে খরচ করার জন্য সেই ভাড়ার টাকা অর্ধেক নেওয়ার জন্য শালিস বসান তার বাবা।
তিনি আরও জানান, শালিসি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভাড়ার অর্ধেক টাকা বাবা নিবেন। সেই হিসেবে কিস্তির টাকা বাবাকে দিতে বলায় আমাকে গালিগালাজ ও মারধর করে। আমি তাকে মারধর করি নাই, শুধু ধাক্কা দিয়েছি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমীর হামজা জানান, অভিযুক্ত সোহাগ পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি।