লৌহজং প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাণিজ্যিক এলাকা করটিয়ার ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের লোহার ব্রিজটি কালের বিবর্তনে মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা যে কোন সময় ধ্বসে পড়তে পারে গুরত্বপুর্ণ এই ব্রিজটি।
জানাগেছে, ১৯৫২ সালে তৎকালীন ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের করটিয়ায় সা’দত কলেজের পূর্ব-উত্তর পাশে সুন্দরী খালের উপর লোহার ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও এই ব্রিজটি কোন ধরণের সংস্কার না করায় এবং এই ব্রিজটি মেয়াদকাল শেষ হওয়ার ফলে বর্তমানে ব্রিজটির অবকাঠামো বিপজ্জনক হয়ে গেছে।
এছাড়াও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অন্যত্র হওয়ায় এই আঞ্চলিক সড়কটি গুরত্বহীন হয়ে পড়ে। ফলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এই ব্রিজটি সংস্কার করছে না ও নতুন করে ব্রিজ তৈরীর কোন উদ্যোগ গ্রহন করছে না। এতে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছে স্থানীয়সহ করটিয়ার হাটে আসা বিভিন্ন ধরণের ভারী যানবাহন।
বিশেষ করে সপ্তাহের মঙ্গলবার ও বুধবার এই ব্রিজটির উপর যানবাহনের প্রচন্ড চাপ থাকে । হাটে আসা ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের আশঙ্কা দ্রুত সংস্কার না করলে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানি।
আবেদা খানম গালর্স হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা আশা আক্তার ও সা’দত কলেজের অনার্স পডুয়া শিক্ষার্থী, মো. নুরে আলম,জামিলুর রহমান, সুভাষ দত্ত,কবীর হোসেন,ছালেহা আক্তার, নুরজাহান বেগম বলেন, প্রতিদিন এই ব্রিজটির উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পারাপারকালে ভারী যানবাহন ব্রিজের উপর উঠলে মনে হয় এইবুঝি ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়লো।
করটিয়া সা’দত বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. ইউসুফ আলী বলেন, ঐতিহ্যবাহী করটিয়া সা’দত বাজার ও করটিয়ার কাপড়ের হাটে আসা যানবাহনগুলো এই ব্রিজটির উপর দিয়ে চলাচল করে থাকে। ব্রিজটি অত্যান্ত পুরাতন হওয়ায় এটার ব্যবহার বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।
এছাড়া ব্রিজটি সরু হওয়ায় প্রতি মঙ্গলবার ও বুধবার ব্রিজটি পার হতে হাটে আসা যান বাহনের ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে যায়। করটিয়ার কাপড়ের হাটটি দেশের বৃহত্তম ও প্রাচিন কাপড়ের হাট। প্রতি সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট-বড় শতশত বিভিন্ন ধরণের যানবাহন নিয়ে ব্যবসায়ীরা এই হাটে আসে। দেশের অর্থনৈতির জন্য গুরত্বপুর্ণ এই হাটে আসা যানবাহনগুলো যেন নিরাপদে পারাপার হতে পারে সেজন্য নতুন করে লোহার ব্রিজের পরিবর্তে একটি নতুন ও প্রশস্ত ব্রিজ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান চৌধুরী মজনু বলেন, ১৯৫২ সালে নির্মিত এই লোহার ব্রিজটি বর্তমানে মেয়াদ উত্তীর্ণ। ব্রিজটি অত্যান্ত সরু হওয়ায় ব্রিজের এপার-ওপার সবসময় যানজট লেগেই থাকে। বিশেষ করে মঙ্গলবার ও বুধবার যান চলাচল স্থবির হয়ে যায়।
এই ব্রিজটি দিয়ে এইচএম ইনিষ্টিটিউট,আবেদা খানম গালর্স হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সা’দত কলেজের হাজার-হাজার ছাত্র-ছাত্রী,শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবক যাতায়াত করেন। এসব স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু শেষ হওয়ার পর এই ব্রীজের কারণে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই স্থানীয় সাংসদ,টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জোর দাবি যত দ্রুত সম্ভব এই মেয়াদ উত্তীর্ণ ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন করে প্রশস্ত একটি আধুনিক ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমেরী খানকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।