লৌহজং প্রতিবেদক: লৌহজং নদীর ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশ থেকে টাঙ্গাইলে এসেছে ‘বিডি ক্লিন এর দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবক। দিনব্যাপী তারা এ নদীর ময়লা, আবর্জনা আর বর্জ্যের ভাগাড় নিমিষে পরিষ্কার করেন।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সদর উপজেলা পরিষদ, টাঙ্গাইল পৌরসভা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন এর সহযোগিতায় লৌহজং নদী পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করা হয়।
১ মার্চ শুক্রবার সকালে হাউজিং মাঠ এলাকায় লৌহজং নদীর ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সাংসদ আলহাজ্ব মো: ছানোয়ার হোসেন।
বিডি ক্লিনের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান জেলা প্রশাসক মোঃ কায়ছারুল ইসলাম ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: ওলিউজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো: শরফুদ্দিন, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ, বিডি ক্লিনের প্রধান সমন্বয়ক জহিরুল ইসলাম রবি, জেলা সমন্বয়ক এমরান রহমান অনিম প্রমুখ।
বিডি ক্লিনের সব সদস্যরা প্রথমে টাঙ্গাইল পৌর শহরের হাউজিং মাঠে একত্রিত হন। এরপরে শপথ বাক্য পাঠ করে নেমে পড়ে নদীর ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদী ময়লা, আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরে গেছে। এছাড়া কল-কারখানার বর্জ্যে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। ফলে নদীর পঁচা পানি প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নদীর দুই তীরের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে জীব বৈচিত্রে।
স্থানীয়রা জানায়,লৌহজং নদীটি সদর উপজেলার যুগনী থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। এক সময় শহরের নিরালা মোড় এলাকায় এ নদীর নৌবন্দর ছিল। দেশ-বিদেশ থেকে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ ও বড় বড় নৌকা এ নৌবন্দরে ভিরতো। এখানে ছিল মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ।
নদীটি টাঙ্গাইল শহরের কাগমারা, পশ্চিম আকুর টাকুর পাড়া, আকুট টাকুর পাড়া, কলেজে পাড়া, বেড়াডোমা, দিঘুলিয়া, কাগমারি, কাজিপুর দিয়ে প্রবাহিত। টাঙ্গাইল শহরের প্রাণ এই নদী।
দীর্ঘদিন ধরে নদীটি খনন না করায় নাব্যতা হারিয়েছে। এ সুযোগে দুই তীরের বাসিন্দারা কৌশলে প্রথমে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দখল করছে। পরবর্তীতে স্থায়ী ভবন, দেওয়াল ও স্থাপনা নির্মাণ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন মিল-কারখানা ও শহরের সব ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলে দূষিত করা হচ্ছে পানি
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন জেলা প্রশাসন মোট ৭৬ কিলোমিটার নদীর মধ্যে টাঙ্গাইল শহরের হাজরা ঘাট থেকে বেড়াডোমা পর্যন্ত মাত্র দেড় কিলোমিটার এলাকা দখল মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়।