লৌহজং প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় বিএনপির কয়েক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার এলেঙ্গা বিরতি রিসোর্টে চাঁদা দাবি করায় রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ কালিহাতীর দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা এসে ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পরে বিএনপি নেতাদের সুপারিশে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে আসে। এঘটনায় এলেঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য রোকন মোল্লাকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জানাযায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু ব্যক্তি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় রোববার ১৫ সেপ্টেম্বর এলেঙ্গার একটি রিসোর্টে বিএনপির নাম ব্যবহার করে কয়েকজন ব্যক্তি চাঁদা দাবি করলে কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিকে খবর দেয়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের হস্তক্ষেপে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকার বিনিময়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন।
আটককৃতরা হলেন, কালিহাতী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ার মোল্লা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এলঙ্গা পৌর বিএনপির সদস্য হূমায়ন করিব, এলেঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকন মোল্লা ও এলেঙ্গা ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি আলমগীর খালিদ। তারা সকলেই রাজাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান মতিনের সমর্থক।
ইতোপুর্বে পৌর বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে বহুমুখী দেশ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আব্দুল হালিম একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। পরে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে থানায় বসে বিষয়টি আপোষ হয়।
এলেঙ্গা বাজারের নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের কয়েকদিন পর থেকেই কয়েকজন লোক বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন মহলে চাঁদাবাজি শুরু করেছে। তাদের চাঁদাবাজির কৌশল দেখলে মনে হয় না যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই। আওয়ামী লীগ আর তাদের মধ্যে কোন প্রার্থক্য নেই।
তারা আরও জানান, বিএনপি নেতাদের আরও সচেতন হতে হবে। আর এসব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ারও আহবান জানান। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম শোভা জানান, চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক করার পর মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। পরে আমি আকটকৃতদের সাথে ফোনে কথা বলেছি, তবে তারা আটক হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি আরও জানান, বিষয়টি আমরা নিবিরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ঘটনার সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন জানান, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সামাজিক অপকর্মের অভিযোগ আসায় রুকন মোল্লাকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কারণ দর্শানোর জবাব দিতে না পারলে তাকে স্থায়ী বহিস্কার করা হবে।